সংবাদ শিরোনাম :
সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটিকে  অভিনন্দন জানিয়েছেন সিলেট মহানগরের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীমঙ্গলে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক শ্রীমঙ্গল থেকে অপহৃত কিশোরী গাজীপুর থেকে উদ্ধার, মূল হোতা গ্রেপ্তার শ্রীমঙ্গলে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার বন্যায় ক্ষতিগস্থ মানুষের পাশে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব ও সারথী ট্রান্সপোর্ট সিলেট সিটি প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি বাবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাগর ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল সিরাজনগর দরবার শরীফের আয়োজনে বিশাল জশনে জুলুস সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালিত গোলাপগঞ্জে অস্ত্র সহ যুবক আটক
কুলাউড়ায় দু’দিনের মাথায় জঙ্গী সন্দেহে নারী-পুরুষসহ আরো ১৭ জন আটক \ সিটিটিসি আসলে সনাক্ত

কুলাউড়ায় দু’দিনের মাথায় জঙ্গী সন্দেহে নারী-পুরুষসহ আরো ১৭ জন আটক \ সিটিটিসি আসলে সনাক্ত

এম.মুসলিম চৌধুরী,নিজস্ব প্রতিবেদক:

রোগী, পিকনিক পার্টিসহ বিভিন্ন বাহানা করে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে পালিয়ে যেতে চাইছিলেন ১৭জন নারী পুরুষ। কিন্তুু সিএনজি চালকদের সচেতনতায় যাত্রীদের অসংগøন কথাবার্তা এবং পরনের কাদামাখা কাপড়চোপড় ও চালচন দেখে সন্দেহ হয়। এরপর অটোরিকশা স্ট্যান্ডে কর্মরতদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় তাঁরা ১৭ জন যাত্রীকে নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ সদস্যদের কাছে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশকে খবর দিলে স্থানীয় পুলিশ এসে ইউনিয়ন কার্যালয় ঘিরে রাখে।
এভাবে সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়ন ও তার আশপাশে এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে ১৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে শনিবার ‘অপারেশন হিল সাইড’ অভিযানে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলার’ মূল নেতা ইমাম মাহমুদ ও চিকিৎসক সোহেল তানজিম আছেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। এর আগে দু’দিন আগে শনিবার কুলাউড়ার পাহাড়ি নির্জন এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নারী পুরুষসহ ১০ জনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। ডাক্তার সোহেল তানজিম ‘অপারেশন হিল সাইড’ অভিযানে আটক নাটোর সদরের চাদপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে মাইশা ইসলাম (২০) এর স্বামী বলে জানা গেছে। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বলে জানা গেছে।
জানাযায়, আটক মাইশার বাবা-চাচা কে প্রায় ৬ বছর আগে বিস্ফোরকসহ নিজ বাড়ীতে পুলিশ আটক করেছিল। চালকদের একজন বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা স্থানীয় আসকরাবাদ চা-বাগানের প্রবেশপথে গাড়ি নিয়ে যাত্রীর অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অপরিচিত এক যুবক এসে তাঁকে বলেন, তাঁদের এক লোক গাছ থেকে পড়ে কোমর ভেঙে ফেলেছেন। তাঁকে মৌলভীবাজার জেলা সদরের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ভাড়া যত লাগে দেবেন। এর পরপর আরও চারজন যুবক অসুস্থ এক বয়স্ক লোককে নিয়ে ছুটে আসেন। তাঁর গাড়িতে রোগীসহ মোট তিনজন যাত্রী ওঠেন। বাকি তিনটি অটোরিকশায় ওঠেন আরও ১৪ জন যাত্রী। উপজেলার সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামে অটোরিকশার এই চালক বলেন, গাড়িতে রোগী থাকায় গাড়ি দ্রæত চালাইয়া তিন-চার কিলোমিটার দূরে রবির বাজার চলে যাই। লুকিং গøাসে দেখি, রোগীর রেইনকোটে কাদা লাগানো, পায়ে জুতা নাই। যাত্রীরা কেমন যেন কথাবার্তা বলছিলেন। দুই দিন আগে এলাকা থাকি জঙ্গি ধরা হইছিল। সব মিলিয়া সন্দেহে পড়লাম। মোবাইলে বাকি তিন ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলি। তারাও সন্দেহ করছিল। রবির বাজার স্ট্যান্ডের ম্যানেজাররে জানাইলে তাইন কইলা, গাড়ি ঘুরাই সব পেসেঞ্জাররে নিয়া ইউনিয়নে যাও। খুব ডর ঢুকে গেল মনে। পরে অনেকগুলো গাড়ি আইয়া আমার গাড়ি পাহারা দিয়া আনে। বাকি তিন গাড়ি আগেই ইউনিয়নে ঢুকে পড়ে।

বাকি তিন চালক বলেন, ইউপি কার্যালয়ে তখন স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দরছ মিয়া ও দুজন গ্রামপুলিশের সদস্য ছিলেন। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তাঁদের কাছে তুলে দেন তাঁরা। তখন একজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা ধাওয়া করে তাঁকে আটকান। এর কিছু পরে কুলাউড়া থানার পুলিশ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী সেখানে যান।
সিএনজি চালক রবিউল্লাহ বলেন, আটকক্রতরা তাদের একজনকে কাঁধে বহন করে নিয়ে আমার গাড়ির সামনে আসেন। তারা বনভোজনে এসেছে এবং মৌলভীবাজার যাবেন বলে আমাকে জানায়। এরপর আমার গাড়িতে তিনজন উঠেন। পরে তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসি। কর্মধা-রবির বাজার অটোরিকশা লাইন কমিটির সহসভাপতি জামাল মিয়া বলেন, ‘এখন অনেকে বলছেন, তাঁরা ১৭ জনকে ধরেছেন। কিন্তু আসল কাজটা ড্রাইভার ভাইরা করছেন। তাঁরা ১৭ জন যাত্রী মৌলভীবাজারে নিয়া গেলে গাড়িগ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া পাইত। তারা টাকার লোভ করেনি। এলাকার কথা, দেশের কথা চিন্তা করছে। তাদের সারা দিন বেকার গেল।’ এলাকার কয়েকজন বলেন, শনিবারের অভিযানের পর পূর্ব টাট্রিউলির জঙ্গি আস্তানা থেকে ১৭ জন পালিয়ে কর্মধার ফানাইপুঞ্জির পূর্ব দিকে গহিন অরণ্যে আশ্রয় নেন। সেখানে বন বিভাগের জমিতে সামাজিক বনায়নের কাজে নিয়োজিত স্থানীয় শ্রমিকেরা তাঁদের দেখতে পান। পরে তাঁরা বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের জানান। স্থানীয় ইউপি সদস্য দরছ মিয়া অটোরিকশার চালকদের সহযোগিতার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরাও রোববার রাত থেকে খোঁজখবর নিচ্ছিলাম। সবার প্রচেষ্টায় ১৭ জনকে ধরা গেছে। এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। সিটিটিসির সদস্যরা এলে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( কুলাউড়া সার্কেল) দিপস্কর ঘোষ, জানান, সন্ধ্যার পর তাদের সিনিয়র অফিসারগণ আসবেন, তারাই এব্যাপারে কথা বলবেন।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন :





© All rights reserved © 2021 Holysylhet